মাতৃমৃত্যুর হার শুধু স্বাস্থ্যের অবস্থার বা স্বাস্থ্যব্যবস্থার একটি সূচক নয়; একটি সমাজ সভ্যতার মানদণ্ডে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে, তা বোঝারও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ২০১৬ সালের মাতৃমৃত্যুর জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে এই হার ছিল প্রতি লাখে ১৯৬। এরপর যেহেতু আর কোনো সরাসরি জরিপ হয়নি, তাই বিভিন্ন প্রাক্কলনে মাতৃমৃত্যুর হার ১৭০ বা ১৫৬ বা ১২৩ বলা হচ্ছে।
মাতৃমৃত্যুর পরিমাপ জটিল ও ব্যয়সাধ্য। এটি নির্ধারণে বিশেষজ্ঞরা ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেন। প্রাক্কলনের সঙ্গে বাস্তবতার বিস্তর ফারাক হতে পারে। তাই আসলে মৃত্যুহারের পরিস্থিতি কী, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
এটা ঠিক যে বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে। নব্বইয়ের দশক থেকে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এই ধারাবাহিক প্রবণতা দেখা গেছে।
নারী শিক্ষা-কর্মসংস্থান-ক্ষমতায়ন, পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণের ফলে সার্বিক প্রজনন হার কমে আসা, হাসপাতালে ডেলিভারি করার প্রবণতা বৃদ্ধি, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি, ব্যক্তি খাতে স্বাস্থ্যসেবার ব্যাপ্তি, রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ক্রয়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি, খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টির অবস্থার উন্নয়ন—এই সব মিলিয়ে সামগ্রিক উন্নয়নের প্রভাব পড়েছে মানুষের গড় আয়ু এবং অন্যান্য সূচকের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হারের ওপরেও।