আমাদের কয়েক গজ সামনে একটি বড় পাতাওয়ালা নাম না জানা গাছ। হঠাৎ আমার অনুসন্ধিৎসু চোখ সেই গাছের পাতার ওপরে বসে থাকা এক পতঙ্গের ওপর আটকে গেল। না, এর আগে এটিকে কখনো দেখিনি। দ্রুত ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডারে চোখ রাখলাম। পতঙ্গটি ফোকাস হতেই পটাপট শাটারে ক্লিক করে গেলাম। সঙ্গে থাকা বন্য প্রাণী গাইড সাতছড়ির রাসেল দেববর্মাকে বললাম, ‘রাসেল, নতুন কিছু মনে হচ্ছে, দ্রুত ছবি তোলো।’ সফর শেষে ঢাকায় এসে রাজ্যের কাজে ডুবে পড়লাম, তাই ছবিগুলো নিয়ে বসতে পারলাম না। কিন্তু কদিন পরে ফেসবুকে পোস্ট করে জানতে পারলাম, অতি বিরল এক প্রজাপতির ছবি তুলেছি, যা এর আগে মাত্র দু–তিনজন ব্যক্তি দেখেছেন।
সূত্রমতে, আলম নামের এক ব্যক্তি প্রথম চট্টগ্রামে পতঙ্গটিকে দেখেন। টরবেন বি লারসেন রচিত বাটারফ্লাইজ ইন বাংলাদেশ, অ্যান অ্যানোটেটেড চেকলিস্ট বইয়ে তিনি উল্লেখ করেছেন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অন্য সময়ের চেয়ে মার্চ-এপ্রিলে এটি সচরাচর দেখা যায়, যদিও হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ায় তেমন একটা চোখে পড়ে না। তবে বাঁশঝাড়ের আশপাশে বাস করা ও একই দলের অন্য প্রজাতিগুলোর সঙ্গে চেহারায় বেশ মিল থাকায় অনেকেই হয়তো এটিকে চিনতে ভুল করে থাকেন। যাহোক, ২০১৯ সালের মার্চে পাখি ও প্রকৃতিবিষয়ক লেখক সৌরভ মাহমুদ বান্দরবানের সাঙ্গু-মাতামুহুরী সংরক্ষিত বনাঞ্চলে পতঙ্গটির দেখা পান। প্রায় পৌনে পাঁচ বছর পর সাগরনালে আমি এর দেখা পেলাম।